সালত আদায় এর নিয়ম

সালত আদায় এর নিয়ম

Post-Salat1বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। এই যুগে আমরা যেকোনো কাজ করার আগে তার অর্থ বা এই কাজ করার যৌক্তিকতা তালাশ করি। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে বলতে হয়, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের উপর দৈনন্দিন যে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত/নামায ফরজ করেছেন তা আমরা বুঝে পড়ি না বা বোঝার চেষ্টাও করিনা(সালাত/নামায কেন এবং কীভাবে পড়বো তাও হয়তো জানি না)। হাশরের ময়দানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সালাত/নামাযের হিশাব সর্বপ্রথম নিবেন। তাই আমাদের সকলকে সালাত/নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। নিচে সালাত/নামাযে আমরা কী পড়ি সে সম্পর্কে সংক্ষেপে তুলে ধরা হল।
.তাকবীরে তাহরীমাঃ উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার অর্থঃ আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
.ছানাপড়াঃ উচ্চারণঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওবিহামদিকা ওতাবারাকাছমুকা ওতাআলাজাদ্দুকা ওলাইলাহাগইরুক। অর্থঃ আয়আল্লাহ! আমি তোমারই পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি তোমার প্রশংসার সহিত, বরকতময় তোমার নাম। সুউচ্চ তোমার মহিমা। এবং তুমি ভিন্ন কোন মাবুদনাই।
.আউযুবিল্লাহ পড়াঃ উচ্চারণঃ আউযুবিল্লা হিমিনাশ শায়তানির রাঝিম। অর্থঃ আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
.বিসমিল্লাহ পড়াঃ উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। অর্থঃ পরমকরুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। .আলহামদু শরীফ তথা সূরায়ে ফাতিহা পড়াঃ উচ্চারণঃ ()আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন, ()আররাহমানির রাহিম, ()মালিকি ইয়াওমিদ্দিন, ()ইয়্যাকা নাবুদু ওইয়্যাকা নাসতাঈন, ()ইহদিনাসসিরাতাল মুসতাকীম, ()সিরাতল্লাযিনা আনআমতা আলাইহিম, ()গাইরিলমাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দ—লিন।(আমীন) অর্থঃ ()সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, ()যিনি সমস্ত জগতসমূহের সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা, পালনকর্তা। ()যিনি দয়াময়, অত্যন্ত দয়ালু, যিনি বড় মেহেরবান। ()যিনি কর্মফল দিবসের একচ্ছত্র মালিক। ()আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদাত করিতেছি এবং তোমারই নিকট সাহায্য  প্রর্থনা করিতেছি। ()আমাদেরকে দোখাও সঠিক সরল পথ। ()তাদের পথ যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করিয়াছ। যারা তোমার অনুগ্রহের পাত্র হইয়াছেন। তাদের পথ নয় যাদের প্রতি তোমার পক্ষ থেকে গযব নাযিল হয়েছে। বিঃ দ্রঃ উক্ত সূরা(ফাতিহা) শেষ করার পর আমীন বলতে হবে এবং সূরা ফাতিহা তথা আলহামদুর সাথে অন্য সূরা মিলানো ওয়াজিব। তবে ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকাতে তা নির্দিষ্ট

. রুকুর তাসবীহ পড়াঃ উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আযিম। অর্থঃ আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি।
. রুকু হইতে উঠিবার সময়ের তাসবীহ পড়াঃ উচ্চারণঃ সামিআল্লাহুলিমান হামিদাহ অর্থঃ যে আল্লাহর প্রশংসা করিয়াছে, আল্লাহ তাহার প্রশংসা কবুল করিয়াছেন।
. রুকু থেকে উঠে দাড়িয়ে থেকে পড়তে হবেঃ উচ্চারণঃ রাব্বানা লাকাল হামদ হামদান কাছীরান ত্বাইয়্যেবান মুবারাকানফিহ। অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক অধিক অধিক প্রশংসা ও পবিত্রতা তোমারই। (এখানে  রাব্বানা লাকাল হামদ পর্যন্ত পড়লেও হবে।)
. সেজদায় তাসবীহ পড়াঃ উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আলা। অর্থঃ আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি।
১০. উভয় বৈঠকে(বসা অবস্থায়) তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতু পড়াঃ উচ্চারণঃ আত্যাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওস্ সলাওয়াতু ওত্ তয়্যেবাতু আসসালামুআলাইকা আয়্যুহান্নাবিয়্যু ওরাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু আসসালামুআলাইনা ওয়ালা ঈবাদিল্লাহি সসলিহিনা আশহাদুআল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদাং আবদুহু ওয়ারাসূলুহ। অর্থঃ সমস্ত মৌখিক ইবাদাত, সমস্ত শারীরিক ইবাদাত এবং সমস্ত পবিত্র বিষয় আল্লাহ তাআলার জন্য। হে নবী! আপনার উপর শান্তি ও তাহার বরকতসমূহ নাযিল হউক। আমাদের প্রতি ও আল্লাহ তাআলার নেক বান্দাদের প্রতি তাঁহার শান্তি বর্ষিত হউক। আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন মাবুদ নাই। আমি আরো সাক্ষ্য দিতেছি যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহার বান্দা ও রাসূল।
১১.দুরুদ শরীফ পড়াঃ উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সল্লেআলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মদ কামা সল্লেইতাআলা ইবরাহিমা ওয়ালা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিকআলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মদ কামা বারাকতাআলা ইবরাহিমা ওয়ালা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ। অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি রহমত বর্ষণ কর মুহাম্মদ(সা.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি, যেমন রহমত বর্ষণ করিয়াছ ইবরাহীম(.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সন্মানিত। হে আল্লাহ! তুমি বরকত নাযিল কর মুহাম্মদ(সা.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি, যেমন বরকত নাযিল করিয়াছ ইবরাহীম(.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সন্মানিত।
১২. দুআয়ে মাসূরা পড়াঃ উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতুনাফসি যুলমাং কাসিরাও ওলা ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্লা আংতা ফাগফিরলি মাগফিরাতাম মিনইংদিকা ওয়ারহামনি ইন্নাকা আংতাল গফুরুর রাহিম। অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার উপর অসংখ্য জুলুম করিয়াছি এবং তুমি ব্যতীত পাপ সমূহ ক্ষমা করিবার আর কেহই নাই। অতএব আমাকে ক্ষমা কর তোমার নিজের পক্ষ হইতে এবং আমাকে দয়া কর। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল, দয়াবান। এখন আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ বলে ডানদিকে ও বামদিকে সালাম দিয়ে নামায শেষ করতে হবে। অর্থঃ (হে মুক্তাদী ও ফেরেশ্তাগন) তোমাদের উপর আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোউক।
বিতরের নামাযে দুআয়ে কুনুত পড়াঃ উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাঈনুকা ওয়ানাসতাগফিরুকা ওয়ানুমিনুবিকা ওয়ানাতাওয়াক্কালু আলাইকা ওয়ানুছনি আলাইকাল খইর, ওয়ানাশকুরুকা ওয়ালানাকফুরুকা ওনাখলাউ ওয়ানাতরুকু মাঈয়াফ যুরুকা, আল্লাহুম্মা ইয়্যা কানাবুদু ওয়ালাকানুসল্লি ওয়ানাসযুদু ওয়ালাইকানাসআ ওয়ানাহফিদু ওনারযু রাহমাতাকা ওয়ানাখশা আযাবাকা ইন্না আযাবাকা বিলকুফ্ফারি মুলহিক। অর্থঃ আয় আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট সাহায্য ভিক্ষা করিতেছি এবং তোমার নিকট  ক্ষমা  প্রর্থনা করিতেছি এবং তোমার উপর ঈমান আনিতেছি এবং তোমার উপর ভরসা করিতেছি। তোমার উত্তম প্রশংসা করিতেছি এবং (চিরকাল) তোমার শুকুরগুজারী করিব, কখনও তোমার নাশুকারী বা কুফুরী করিব না। তোমার নাফরমানী যাহারা করে(তাহাদের সহিত আমরা কোন সম্পর্কও রাখিব না।) তাহাদের আমরা পরিত্যাগ করিয়া চলিব। হে আল্লাহ! আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদাত করিব,(অন্য কাহারও ইবাদাত করিব না।) একমাত্র তোমার জন্য নামায পড়িব, একমাত্র তোমাকেই সেজদা করিব,(তুমি ব্যতীত আর কাহাকেও সেজদা করিব না।) এবং একমাত্র তোমার আদেশ পালন ও তাবেদারীর জন্য সর্বদা(দৃঢ় মনে) প্রস্তুত আছি। (সর্বদা) তোমার রহমতের আশা এবং তোমার আযাবের ভয় অন্তরে রাখি। (যদিও) তোমার আসল আযাব নাফরমানদের উপরই হইবে।(তথাপি আমরা সেই আযাবের ভয়ে কম্পমান থাকি।)

Comments

Popular posts from this blog

নারী এবং পুরুষের যৌন সমস্যা সমাধান

সেক্স বেশীক্ষন করার প্রাকৃতিক উপায় কি?

Bangla Health । বাংলা হেলথ | Health News and Information